গাজীপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির আত্মঘাতী বোমা হামলার ১৫তম বার্ষিকী আজ (২৯ নভেম্বর)। ২০০৫ সালের এ দিন সকালে গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির ২ নম্বর হলরুমে জেএমবি সদস্যদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় চার আইনজীবী, চার বিচারপ্রার্থীসহ হামলাকারী জঙ্গি নিহত হয়। হামলায় আরও অর্ধশতাধিক আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী আহত হন। পরে আহত অবস্থায় আরও একজন আইনজীবী মারা যান।
নৃশংস এ বোমা হামলায় নিহত আইনজীবীরা হলেন- আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আমজাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল আজিম, অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা, অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক অভি ও অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন মাখন। নিহত বিচারপ্রার্থীরা হলেন- আব্দুর রউফ, বশির মেম্বার, শামসুল হক ও মর্জিনা বেগম। আত্মঘাতী জঙ্গির নাম শরিয়ত উল্লাহ ওরফে আসাদুল ইসলাম।
এ ঘটনার দুদিন পর ১ ডিসেম্বর দুপুরে আবারও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে জেএমবি বোমা হামলা চালায়। এতে কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম সরকার নিহত ও সাংবাদিক মো. আমিনুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, নজরুল ইসলাম বাদামীসহ ২৫ জন আহত হন। এদিন জেএমবির এক আত্মঘাতী সদস্য ফ্ল্যাক্স বোমা হামলা চালায়।
গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সোবহান জানান, জেএমবির বোমা হামলার ১৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সমিতির উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন, কালোব্যাজধারণ, শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শোকর্যালি, শোকসভা, মিলাদ, দোয়া ও তবারক বিতরণ। এসব অনুষ্ঠানে জেলা জজ, জেলা প্রশাসক, জিপি, পিপি, আইনজীবীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন।
দুই দফা হামলায় হতাহতের ঘটনায় পুলিশ প্রথমে অজ্ঞাত জেএমবি সদস্যদের নামে তিনটি মামলা করে। পরে গাজীপুরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা জেএমবি সদস্যদের গ্রেনেড, গ্রেনেড তৈরির উপকরণ, জেহাদি বই ইত্যাদি উদ্ধার করে সর্বমোট ২১টি মামলা দায়ের করেন।
মামলাগুলোর মধ্যে কয়েকটির বিচারকার্য সম্পন্ন হলেও অন্য কয়েকটি মামলার বিচারকাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে রয়েছে বলে জানান গাজীপুর বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সোবহান।